পিতা-মাতা সন্তানের জন্য কত কষ্ট সহ্য
করতে পারে আর কত অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করে তার একটা দিক জানতে দেখতে হবে ‘দ্য স্কাই
ইজ পিংক’ মুভিটা। স্পয়লার দিয়ে মজা নষ্ট করবো না। তাই কাহিনীর দিকে যাবো না অতটা। কিন্তু
যে চমৎকার কনটেন্টের কারণে আপনাকে মুভিটা দেখতে হবে তা নিয়ে একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা
করবো।
পিতা-মাতার জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয়
হলো সন্তানের মুখ দর্শন। এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। যে সকল দম্পতিদের সন্তান হয় না
তারা হয়তো সন্তানের মর্মটা আরো বেশি বোঝেন। কিন্তু এমনও এক সময় হয়, যখন সন্তান আসবে
এই সংবাদ শুনে শঙ্কা কাজ করে। হয়তো ভাবছেন, এ আবার কেমন বাবা-মা যারা সন্তানকে পৃথিবীতেই
আসতে দিতে চান না। তাহলে আপনাকে বলবো, ঘটনার পেছনে কারণ থাকে। এতো সহজে কাউকে বিচার
করাটা ঠিক নয়। কেন এই দম্পতি আবার সন্তান নিতে শঙ্কিত ছিল তা জাজ করার জন্য আপনাকে
মুভিটা দেখতে হবে। দেখলেই উত্তর পাওয়া যাবে।
সন্তানদের নিয়ে পিতা-মাতার জীবন সংগ্রাম
খুব কষ্টের। তাদের সেই চেষ্টার কোন তুলনা হয় না। কিন্তু সেই কষ্টটা কখনও সন্তানের উপর
চাপিয়ে দিতে নেই। সন্তানের সাথে বন্ধুসুলভ মেলামেশা সন্তানের মনোদৈহিক বৃদ্ধিতে সহায়তা
করে। একজন আরেকজনকে বুঝতে পারার মাধ্যমেই স্বার্থকতা। ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ মুভি সে
বার্তাটাই আমাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
ভাই বোনের জোড় পৃথিবীতে মেলা ভার। বোনের
কষ্টের জন্য আত্মত্যাগ করাতেই ভাইয়ের আনন্দ। ছোট বেলা থেকেই মা-বাবার আদর স্নেহ ঠিকভাবে
না পেয়ে একটা ছেলের কীভাবে দিন কাটে তা অনুভব না করলে বোঝা যায় না। কিন্তু সন্তানের
বাইরেও তার একটা পরিচয় আছে, সে কারো ভাই। এই পরিচয়ই তাকে ম্যাচিউর হতে শেখায়। ভেবে
দেখুন তো একবার, এই মেলাবন্ধন যদি চিরস্থায়ী না হয়। ভাইয়ের দিনগুলো কেমন যায় যখন সে
জানতে পারে বোনটির সাথে তার আর সুখ-দুঃখ ভাগ করা হবে না। ভাই-বোনের এ বন্ধন বুঝতে ‘দ্য
স্কাই ইজ পিংক’ আপনাকে দেখতেই হবে।
আজকালকার দিনে নারী-পুরুষ উভয়ে সংসারে
অবদান রাখেন। এটাকে অনেকে খারাপ চোখে দেখেন। তাদের অনেকের ধারণা থাকে, এতে সংসার টিকে
না। তাদের ধারণা সঠিক কিংবা ভুল কোনটাই বলতে চাই না। শুধু বলবো, পরিবেশ পরিস্থিতি সব
সময় সব জায়গায় এক রকম হয় না। কোন কোন সময় দুজনের কন্ট্রিবিউট করা জরুরী হয়ে পড়ে। কখনও
দুজনের সম্মতিতেই দুজন উপার্জন করেন। কখনও কখনও পরিস্থিতির কারণে দুজনের মধ্যে মনমালিন্য
হয়। কিন্তু ভালবাসার জোরে সেগুলো হয় সাময়িক। এবং তারা সুখেই সংসার করেন।
পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে সবাইকে।
আজ হোক কিংবা কাল। কিন্তু কঠিন কোন রোগ হলেই সে শেষ হয়ে যাবে, এটা অনেকটা ভুল। কখনও
হার মানার মানসিকতা রাখা উচিত নয়। শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করাটা একান্ত কর্তব্য। পরিবারের
সমর্থন খুব বেশি প্রয়োজন এ অবস্থায়। পরিবারের সমর্থন পেলে তাদের অর্ধেক কষ্ট কমতে বাধ্য।
এতে তারা স্বাভাবিকভাবে আর সবার মতো জীবন যাপন করতে পারেন। এমননি পরিবারের উৎসাহে জীবনে
কিছু করার সাহস ঐ ব্যক্তিগুলো পান এবং করেও দেখাতে পারেন। দ্য স্কাই ইজ পিংক মুভিটি
এ ধরনের কনটেন্ট দিয়েই তৈরি করা হয়েছে। আশা করি ছবিটা আপনাদের নিরাশ করবে না।
অ্যাডাল্ট কনটেন্ট সতর্কতা: মুভিটিতে
কিছু দৃশ্য বা সংলাপ আছে যা অনেকের কাছে মানানসই নাও মনে হতে পারে। তবে বাস্তবতা চিন্তা
করলে কনটেন্টগুলো অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়নি। বন্ধু-বান্ধব, ভাই-ব্রাদার একসাথে দেখলে সমস্যা
নেই। তবে ফ্যামিলির সাথে দেখতে হলে আপনি আগে দেখে জায়গাগুলো স্কিপ করে যেতে পারেন।
তবে যাদের কাছে ট্যাবু ভাঙাটা কোন ব্যাপার নয়, তারা এক নিমিষেই ছবিটা দেখতে পারেন।
ছবির নাম: দ্য স্কাই ইজ পিংক।
পরিচালক: সোনালী বোস।
ভাষা: হিন্দি।
রিলিজ ইয়ার: ২০১৯।
মূখ্য চরিত্র: ফারহান আকতার, প্রিয়াঙ্কা
চোপড়া, জায়রা ওয়াসিম, রোহিত সুরেশ সরফ প্রমুখ।
আইএমডিবি রেটিং- ৭.৫/১০।
রোটেন টমেটো রেটিং পয়েন্ট-
টমেটো মিটার- ৭২%, অডিয়েন্স স্কোর- ৯১%।
ব্যক্তিগত রেটিং- ৮/১০।
Comments
Post a Comment