বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৪। একজন খেলোয়ার মাঠে প্রবেশ করলেন।
ঝিগঝ্যাগ স্টাইলের হেয়ার কাট। কেউ করল প্রশংসা, কেউবা সমালোচনা। কিন্তু কেউ খবর রাখল না, বুঝতেও পারলনা তার হেয়ার স্টাইলের কারণ। হেয়ার কাটের আবার কারণও থাকে!
যে কারণে তার এ হেয়ার কাট
এরিক নামের একটি শিশুর মস্তিস্ক অপারেশন হয়েছিল। তার মাথার
ডানপাশেও ছিল এ রকম দাগ। তার প্রতি সম্মান জানাতেই ছিল হেয়ার কাট। শিশুটি খেলোয়ারের
রক্তের সম্পর্কের কেউ ছিল না। ছিল না তার দেশেরও অধিবাসী। স্প্যানিশ এই শিশুটির মা-বাবা তার
সাথে যোগাযোগ করে। তাদের দশ মাস বয়সের শিশুর অপারেশনের জন্য চ্যারিটি অকশন করতে।
তাদের চাওয়া ছিল একটি জার্সি ও বুট। কিন্তু তিনি আরও কয়েক
ধাপ এগিয়ে এসে তাদের চমকে দিলেন। বললেন, শিশুটির অপারেশনের খরচের দায়িত্ব নিবেন। অপারেশনের জন্য দিলেন পঞ্চাশ হাজার
ডলার। অপারেশন পরবর্তি প্রতি সেশন ও ওষুধের জন্য পাঁচ হাজার ডলার করে।
তিনি ট্যাটু করেন না
হালের ফ্যাশন ট্যাটু। না করলে যেন সেকেলেই রয়ে গেলেন কেউ।
সেই খেলোয়ারটি ট্যাটু করেন না। আজব! ট্যাটু করলে কি না করলেই বা কি? ট্যাটুর জন্য শারিরিক কিছু রোগ হতে পারে। কারণটা তাও না। সে
সমস্যাগুলো তৈরি হলে তিনি যে রক্ত দিতে পারবেন না! জানা যায়, বছরে দুবার তিনি রক্ত দান করেন।
দুঃসময়ে মানুষের পাশে
২০১২ সাল। ২০১১ সালের পাওয়া গোল্ডেন বুটটি বিক্রি করলেন ১.৫
মিলিয়ন ডলার দিয়ে। দান করলেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজার স্কুল শিশুদের জন্য। ২০০৪, ভূমিকম্প ও সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ বিধ্বস্ত।
আচেহ প্রদেশ পুনর্গঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করলেন নিজ শহর থেকে। পরে এ রকম কাজের
জন্য যুক্ত হলেন তার দেশের অন্যান্য সংস্থার সাথে।
তার অন্যান্য সমাজ সেবামূলক কাজ
এ ধরনের আরো অনেক সমাজ সেবামূলক কাজই তিনি করেন। কিন্তু
মিডিয়া কভারেজের বাইরে থেকে। সেলিব্রেটিদের নিয়ে কাজ করা একটি ওয়েব সাইট looktothestars.org। সেখানে রোনালদোর এ ধরনের কাজের একটি ছোট্ট তালিকা আছে।
এইড স্টিল রিকয়ার্ড (নন প্রফিট অর্গানাইজেশন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমর্থনের জন্য)।
ক্যায়োনাস স্কটল্যান্ড (পুরুষদের ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক
চ্যারিটি)।
সেভ দ্য চিলড্রেন (যুক্তরাষ্ট্র ও সমগ্র বিশ্বে শিশুদের
বাস্তব এবং দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন তৈরি করতে)।
ইউনিসেফ (শিশুদের স্বাস্থ্য, টিকা ও বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পুষ্টি, শিক্ষা, জরুরী ত্রাণ এবং অন্যান্য)
ওয়ার্ল্ড ভিশন (বিশ্বব্যাপী দারিদ্র মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য নিবেদিত ত্রাণ ও উন্নয়ন সংস্থা)।
নিন্দিত- নন্দিত
তারপরেও তিনি নিন্দিত। তার জীবনচারণ আর দশজন স্টার
খেলোয়ারের মতই। লাক্সারিয়াস জীবন যাপনে তিনি অভ্যস্ত। বলা হয়ে থাকে, গাড়ির চেয়ে নারী পাল্টান বেশি। এটা তার ব্যক্তিগত জীবন। এ
জীবনে উত্থান-পতন থাকতেই পারে। তার খেলা নিয়েও আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু এ সবের পরেও তার আলাদা একটা পরিচয় আছে। তিনি একজন
‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস হিউম্যান বিয়িং’।
বিঃদ্রঃ- আমার এ লেখাটি বিডিইয়ুথ.কমে প্রকাশিত হয়েছিল। এটার কপিরাইট তাদেরই। আমি শুধু পোর্টফোলিও তৈরির জন্য অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করছি।
Comments
Post a Comment